মোঃ কামরুল ইসলাম, রাংগামাটি প্রতিনিধি;-
বাংলাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের ইতিহাস বলতেই প্রথম যে নামটি উচ্চারিত হয়, সেটি হলো এস এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিস। দেশের প্রথম কুরিয়ার সার্ভিস হিসেবে গত ৪২ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি মানুষের কাছে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য ডেলিভারির প্রতীক হয়ে উঠেছে। আজ এটি শুধু একটি পরিবহন কোম্পানি নয়, বরং দেশের কোটি মানুষের আস্থার নাম।
এস এ পরিবহনের যাত্রা শুরু করেছিলেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন আহমেদ। দূরদর্শী নেতৃত্ব ও গ্রাহকবান্ধব নীতির মাধ্যমে তিনি দেশের কুরিয়ার খাতের নতুন অধ্যায় সূচনা করেন।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ১১০টিরও বেশি শাখা ও সার্ভিস পয়েন্ট, যা সারা দেশে বিস্তৃত। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম কিংবা পাহাড়ি জনপদ সব জায়গায়ই পৌঁছে গেছে এই সেবার নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামের জেনারেল ম্যানেজার মোরশেদ আলম বলেন,সুনামের সঙ্গে আমরা এই ব্যবসা পরিচালনা করছি। গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখাটাই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।
রাঙামাটি শাখার ম্যানেজার মোঃ মশিউর রহমান রাজন বলেন। আমরা গ্রাহকদের যথাযথ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। পাহাড়ি ও বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকে সমান আন্তরিকতা ও সুনামের সঙ্গে সেবা দিয়ে থাকি।
এস এ পরিবহন দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের জন্য বহুমাত্রিক সেবা দিয়ে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে ছোট থেকে বড় পার্সেল সার্ভিস, দ্রুততম সময়ে ডেলিভারি। কর্পোরেট ও ই-কমার্স ডেলিভারি সাপোর্ট, কোল্ড চেইন সার্ভিস (পচনশীল পণ্যের জন্য)। ভারী মালামাল পরিবহনের জন্য আলাদা সার্ভিস।
দেশের ভেতরে যেমন, তেমনি এখন দেশের বাইরে পাঠানো মালামাল পরিবহনেও নির্ভরযোগ্যতা গড়ে তুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। সময়মতো ডেলিভারির নিশ্চয়তা। মালামালের নিরাপত্তা। ক্ষতি বা হারানোর ঝুঁকি খুবই কম। আধুনিক ট্র্যাকিং সিস্টেম, দেশের অন্যতম বৃহৎ পরিবহন নেটওয়ার্ক। গ্রাহকের আস্থা ও বিশ্বাস ।
রাজশাহীর ফলচাষি আবদুল করিম বলেন। আমরা মৌসুমি আম পাঠাই ঢাকায়। এস এ পরিবহনের কোল্ড চেইন ব্যবহারে ফল ভালো থাকে, নষ্ট হয় না। এতে ভালো দাম পাওয়া যায়।
একজন ই–কমার্স উদ্যোক্তা আফসানা রহমান জানান, আমি ব্যবসার সব ডেলিভারি দিচ্ছি এস এ পরিবহন দিয়ে। তাদের সময়নিষ্ঠ সেবায় আমার গ্রাহকরা সবসময় খুশি থাকেন।
বাংলাদেশে কুরিয়ার খাতের আকার বর্তমানে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা, এবং প্রতিবছর এ খাত ২০% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন কুরিয়ার ব্যবসার ৪২% টার্নওভার ই-কমার্স ডেলিভারি থেকে আসে। ২০২৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ই-কমার্স বাজার দাঁড়াবে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার—যেখানে এস এ পরিবহন বড় অংশীদারিত্ব রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গ্রাহকদের সুবিধার্থে চালু হয়েছে এস এ টিভি, যেখানে পরিবহন খাতের তথ্য ও আপডেট নিয়মিত তুলে ধরা হয়। এছাড়া আধুনিক ট্র্যাকিং সিস্টেম গ্রাহকদের ডেলিভারি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য জানতে সাহায্য করছে।
প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিত করা। এজন্য তারা পরিকল্পনা করছে। অটোমেটেড গুদাম স্থাপন, উন্নত ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু, আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস সম্প্রসারণ, ৪২ বছরের অভিজ্ঞতা, ১১০টিরও বেশি শাখা, কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা, নিরাপদ ও সময়মতো ডেলিভারি এবং কোটি মানুষের আস্থা—এস এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিস আজ বাংলাদেশের কুরিয়ার শিল্পের গৌরবময় দৃষ্টান্ত।