মোঃ সোহেল রানা, রাঙ্গামাটির জেলা প্রতিনিধি:
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম সম অধিকার যুব পরিষদের একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এই নতুন কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আসাদুজ্জামান খান এবং সদস্য সচিব নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল মান্নান। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি তিন মাসের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
রাঙ্গামাটি জেলার বায়তুশ শরফ মাদ্রাসার মিলনায়তনে বিকাল তিন ঘটিকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম অধিকার যুব আন্দোলনের রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান খান।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর কামাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন Dialogue for Pesce of CHT(DPC) এর নির্বাহী পরিচালক এ্যাড. কামাল হোসেন সুজন, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম রাঙ্গামাটি জেলার সভাপতি হাজী শরীয়ত উল্লাহ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার রাঙ্গামাটি জেলার আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন সহ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মী গণ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ্যাডভোকেট কামাল হোসেন সুজন বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ২রা ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের বিশেষ মর্যাদা স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এছাড়াও এই চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদের সমন্বয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে অন্তত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো পার্বত্য জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ এবং উন্নয়ন বোর্ড নিয়ে যে আইন প্রণয়ন করা হয়ে সেটি সম্পূর্ণ বাঙ্গালীদের প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে বাঙ্গালিদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে চিরতরের জন্য দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইনে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়া কোন বাঙ্গালির পক্ষে সম্ভব নয়। এ জনপদে বাঙালিরা এই অঞ্চলের নাগরিক হয়েও অধিকার হারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। চুক্তিতে নিজেদেরকে উপজাতি পরিচয় দিলেও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে ছিনিয়ে নিতে আধিবাসী সাঁজে তারা সাজতে বদ্ধপরিকর। এ পশ্চিমা নীল নকশা এ অঞ্চলে কখনোই বাস্তবায়ন হতে দেওয়া যাবে না। এই বাংলায় বাঙ্গালিদের ইতিহাস হাজার বছরের, এই পার্বত্য অঞ্চল বাংলার বা বাংলাদেশের বাহিরের কোন জনপদ নয়। চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল উপজাতীয় সশস্ত্র দলগুলোর অস্ত্র জমা দেওয়া, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় এই প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী বিশেষ করে নতুন করে গড়ে ওঠা গ্রুপগুলো, এই অস্ত্র ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম এবং খুনের মতো অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে জীবনযাপন করছে। চুক্তির সকল শর্ত সরকার মানতে পারলেও তাঁদের হাতে থাকা অস্ত্র জমা দেওয়ার মতো একটা শর্ত তারাতো মানছেই না বরং দিন দিন অস্ত্রের মজুত তারা বৃদ্ধি করছে।